গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলন করেন সালাহ উদ্দিন। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রাজপথে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলবে, জনমত তৈরি করার চেষ্টা করবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তারা আন্দোলন-সংগ্রাম করবে। তার জন্য তো আমরা জীবন দিয়েছি। সেটার চর্চা থাকবে। তিনি আরও বলেন, আমার একটি বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে বা করার চেষ্টা করা হয়েছে। গতকালকে একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময়, তারা আমার একটা বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে আমাকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। এটাকে স্বাগত জানাই এভাবেই রাজনৈতিক চর্চা হওয়া উচিত। তারা যথেষ্ট সম্মানের সহিত কথাগুলো বলেছেন।
আমি মনে করেছি বিষয়টি স্পষ্ট করা দরকার। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আমি গতকাল একটি অনুষ্ঠানে কিছু কথা বলেছিলাম, সেখানে ঠিক কি বলেছিলাম সেটি এখন আবার বলছি- গত শুক্রবার জুলাই জাতীয় সনদ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তার আগে কিছু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার মাঠে। তার প্রেক্ষিতে আমাকে প্রশ্ন করা হলে আমি বলেছিলাম, জুলাই যোদ্ধা নামে একটি সংগঠন আমাদের সঙ্গেও কথা বলেছিল। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গেও কথা বলেছিল, তাদের একটা যৌক্তিক দাবি ছিল। সেই যৌক্তিক দাবি পূরণের জন্য আমি নিজেও স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেটি কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রিয়াজ সঠিকভাবে গ্রহণ এবং সংশোধন করেছেন। এরপর তাদের অসন্তোষ থাকার কথা নয়। সেখানে যে সমস্ত বিশৃঙ্খলা হয়েছে আমরা খোঁজ নিয়েছি এবং তদন্তাধীন আছে। দেখা গেছে এখানে জুলাই যোদ্ধা নামে কিছু সংখ্যক ছাত্র নামধারী, যেটা আমি ইন্টারভিউতে দেখেছি, কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক ঢুকেছে। সেটা ফ্যাসিস্ট সরকারের ফ্যাসিস্ট বাহিনী বলে আমি মনে করি।
এখন যে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় ফাঁক ফোকরে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে সেটা গতকাল (শুক্রবার) দৃশ্যমান হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখানে কোনো জুলাই যোদ্ধা, জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কোনো সংগঠন অথবা কোনো ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে না। এটা ছিল আমার সুস্পষ্ট বক্তব্য। এই কথার মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে আমি জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি সংগঠন এবং শক্তিদের সম্মানিত করার চেষ্টা করেছি। যাতে কোনো ক্রমে কেউ যেন জুলাই যোদ্ধাদের এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের জন্য বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত না করতে পারে এবং তাদের সম্মানহানি না হয়। সালাহউদ্দিন আহমদ দাবি করেন, আমি মনে করি না আমার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। তবে আংশিক বক্তব্য কাট করে তারা (এনসিপি) কথা বলেছে বলে আমার মনে হয়।
কারণ আমি আমার বক্তব্যের শেষ লাইনে বলেছি যে, ওখানে কোনো জুলাই যোদ্ধা, সঠিক কোনো জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কোনো সংগঠন অথবা ব্যক্তি ওই বিশৃঙ্খল ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে না। জড়িত থাকতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না।দেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিষয়টি আপনারা কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমার মনে হয় এ বিষয়ে পরে কথা বলা যাবে। কারণ বিষয়গুলো তদন্তাধীন আছে। সরকার সম্ভবত একটা তদন্ত টিম করেছে, তাদের তদন্তে কি আসে দেখা যাক।
তবে, আমার মনে হয়, কিছু-কিছু ঘটনা একই সূত্রে গাথা। দেশে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য হয়ত এগুলো করে থাকতে পারে কোনো-কোনো গোষ্ঠী। তার সঙ্গে হয়ত পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা এবং পতিত ফ্যাসিবাদ জড়িত থাকতে পারে। তবে, সেটা তদন্ত করার আগে বলা যাবে না। জুলাই গণঅভুত্থানে বিএনপির ৪২২ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, তার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সালাহ উদ্দিন। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের সময় নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু প্রস্তাব আছে বলে উল্লেখ করে সালাহ উদ্দিন বলেন, কিন্তু পরবর্তী সংসদ যেন জুলাই সনদের প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করতে বাধ্য থাকে তার জন্য গণভোটের প্রস্তাব আমরা করেছি।





